ঢাকা, বাংলাদেশ

রাজি হলেন অবশেষে, টেস্ট দলের নেতৃত্বে ফের শান্ত!

প্রকাশিত :

স্পোর্টস রিপোর্টার : বাংলাদেশ ক্রিকেটে নেতৃত্বের গল্প কখনোই স্থির ছিল না। অধিনায়কত্ব যেন এখানে একটানা যাত্রা নয়, বরং অধ্যায়ভিত্তিক এক গল্প। সেই গল্পে আবারও ফিরে আসছেন নাজমুল হোসেন শান্ত। বাংলাদেশের টেস্ট দলের নতুন (অথবা পুরোনো) অধিনায়ক হিসেবে। বিসিবির সূত্র নিশ্চিত করেছে, শান্ত ইতিমধ্যেই সম্মতি দিয়েছেন; এখন শুধু আনুষ্ঠানিক ঘোষণার অপেক্ষা।

গত জুনে কলম্বোর সিংহলিজ স্পোর্টস ক্লাব মাঠে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে ইনিংস ব্যবধানে পরাজয়ের পর টেস্ট দলের নেতৃত্ব থেকে হঠাৎই সরে দাঁড়ান শান্ত। সংবাদ সম্মেলনে তার সেই সিদ্ধান্ত বিস্মিত করেছিল সবাইকে। কারণ, মাত্র কয়েক মাস আগেই তাকে টেস্টে দীর্ঘমেয়াদি নেতৃত্বের মুখ হিসেবে বিবেচনা করা হচ্ছিল। কিন্তু পরাজয়ের পর মানসিক ক্লান্তি, সমালোচনা এবং দায়িত্বের ভারে নুইয়ে পড়েছিলেন এই তরুণ ব্যাটার।


এরপর টেস্ট দল হয়ে পড়ে নেতৃত্বশূন্য। বোর্ডের ভেতরে শুরু হয় নতুন অধিনায়ক খোঁজার পালা। লিটন দাস, মেহেদী হাসান মিরাজ, দুজনের নামই আসে আলোচনায়। মিরাজের ওপর ওয়ানডে অধিনায়কত্বের চাপ এবং লিটনের সাম্প্রতিক ফর্ম-দু’য়ের কারণেই সিদ্ধান্তে দোটানায় পড়ে বিসিবি। শেষ পর্যন্ত আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে ফিরে আসেন শান্ত নিজেই।

ক্রিকেট অপারেশন্স বিভাগ প্রথমে তাকে রাজি করানোর চেষ্টা করে ব্যর্থ হয়। পরে বোর্ডের একজন সাবেক ক্রিকেটার, বর্তমানে পরিচালক হিসেবে দায়িত্বে থাকা সেই পরিচিত মুখ ব্যক্তিগতভাবে শান্তর সঙ্গে যোগাযোগ করেন। কয়েকদিনের কথোপকথনের পর শান্ত নিজের সিদ্ধান্ত বদলান। বিসিবি কর্মকর্তারা চট্টগ্রামে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে টি-টোয়েন্টি সিরিজের শেষ ম্যাচের রাতে তার সঙ্গে বৈঠকে বসেন। সেখানেই সম্মতি দেন তিনি।


এর পরদিনই বোর্ড সভাপতি আমিনুল ইসলাম কয়েকজন পরিচালককে সঙ্গে নিয়ে বৈঠকে বসেন এবং আনুষ্ঠানিকভাবে শান্তর নাম চূড়ান্ত হয়। এবার তাকে দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনার অংশ হিসেবেই দায়িত্ব দেওয়া হচ্ছে বলে জানিয়েছে সূত্র। বিসিবির ধারণা, শান্তর নেতৃত্বে বাংলাদেশ টেস্টে স্থিতিশীলতা ও নতুন দিক খুঁজে পেতে পারে।

শান্তর টেস্ট ক্যারিয়ার এখন পর্যন্ত ২৩ ম্যাচে ১,৩০০ রানের বেশি। সাম্প্রতিক বছরগুলোতে তার ব্যাটিংয়ে দৃঢ়তা ও পরিণতিবোধ এসেছে, যা তাকে নেতৃত্বের স্বাভাবিক পছন্দে পরিণত করেছে। শ্রীলঙ্কা সফরের পর নেতৃত্ব ছাড়লেও, সতীর্থদের আস্থার জায়গায় ছিলেন সবসময়ই।

ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে প্রথম টি-টোয়েন্টির আগে লিটন দাসকে নেতৃত্ব প্রসঙ্গে প্রশ্ন করা হলে তিনি বলেন, ‘টেস্টের নেতৃত্ব পাওয়া যেকোনো ক্রিকেটারের জন্যই গর্বের, তবে বোর্ড এখনো কোনো আলোচনা করেনি।’ সেই মন্তব্যই ছিল ইঙ্গিত-বোর্ড অন্য পথে হাঁটছে।

বিসিবির সূত্র জানাচ্ছে, শান্তর ব্যক্তিত্ব, শান্ত মেজাজ ও ব্যাটিং ধারাবাহিকতা তাকে এই দায়িত্বে ফেরানোর প্রধান কারণ। নেতৃত্ব গ্রহণে প্রথমে অনীহা থাকলেও, শেষ পর্যন্ত দেশের প্রয়োজনেই রাজি হয়েছেন তিনি। বোর্ড চায় তাকে অন্তত পরবর্তী দুই টেস্ট সিরিজ পর্যন্ত দায়িত্বে রাখতে, এরপর পরিস্থিতি অনুযায়ী মেয়াদ বাড়ানো হতে পারে!