সোমবার   ২৩ ডিসেম্বর ২০২৪   পৌষ ৯ ১৪৩১   ২১ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

৪২০

টঙ্গীর ভোট পাল্টে দিতে পারে গাজীপুর সিটি নির্বাচনের হিসাব..

প্রকাশিত: ২২ মে ২০২৩  

দীর্ঘদিন টঙ্গী পৌরসভার মেয়র হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন গাজীপুর সিটি করপোরেশন নির্বাচনে আওয়ামী লীগের মেয়র পদপ্রার্থী আজমত উল্লা খান। টঙ্গী আজমত উল্লার নিজের এলাকা ও ঘাঁটি হিসেবে পরিচিত। তবে এবারের নির্বাচনে টঙ্গী এলাকার ভোট কোনো একক প্রার্থীর পক্ষে থাকবে, নাকি হিসাব-নিকাশ পাল্টে দেবে, এই প্রশ্নে ভোটের মাঠে চলছে নানা আলোচনা।

গাজীপুর সিটির নির্বাচনের বর্তমান পরিস্থিতি নিয়ে সেখানকার রাজনৈতিক দলের নেতা, রাজনীতি সচেতন ব্যক্তি ও সাধারণ ভোটারদের  রয়েছে বিস্তর জল্পনা। তাঁদের মতে, ২০১৩ সালের সিটি করপোরেশন নির্বাচনে টঙ্গী এলাকায় আজমত উল্লার ফলাফল ভালো ছিল না। এবার টঙ্গী এলাকায় জনপ্রিয় ‘সরকার’ পরিবারের স্বতন্ত্র প্রার্থী রয়েছে।

পাশাপাশি ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের প্রার্থীও টঙ্গী এলাকার। ফলে এবারও এই এলাকার ভোট আজমত উল্লার একচেটিয়া পাওয়ার সম্ভাবনা কম।

টঙ্গী ও গাজীপুর পৌরসভা এবং কোনাবাড়ি, কাশিমপুর, গাছা, পূবাইল, কাউলতিয়া ও বাসন—এ ছয় ইউনিয়ন নিয়ে গাজীপুর সিটি করপোরেশন প্রতিষ্ঠা হয়েছে ২০১৩ সালে। গাজীপুর সিটির মোট ভোটার সংখ্যা ১১ লাখ ৭৯ হাজার ৪৭৬। মোট ভোটারের ৩০ শতাংশের মতো ভোটার টঙ্গী এলাকার। ফলে টঙ্গী এলাকার ভোট নির্বাচনের ফলাফলে বড় ভূমিকা রাখবে।

গাজীপুর সিটি করপোরেশন গঠিত হওয়ার পর প্রথম নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয় ২০১৩ সালে। ওই নির্বাচনে আওয়ামী লীগের হয়ে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন গাজীপুর মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি আজমত উল্লা খান। এর আগে তিনি ১৮ বছর টঙ্গী পৌরসভার মেয়রের দায়িত্ব পালন করেন। ফলে টঙ্গী এলাকায় আজমতের প্রভাব রয়েছে বলে রাজনৈতিক মহলের ধারণা।

তবে ২০১৩ সালের গাজীপুর সিটি করপোরেশন নির্বাচনের ফলাফলে ভিন্ন চিত্রই উঠে আসে। ওই নির্বাচনে মোট ৩৯২টি কেন্দ্রের মধ্যে ৩৩৪টিতেই হেরেছিলেন আজমত উল্লা। এর মধ্যে টঙ্গীর ১৩৩ কেন্দ্রের মধ্যে ১০০টিতেই হারেন তিনি। ২০১৩ সালের নির্বাচনে টঙ্গী এলাকার কেন্দ্রগুলোয় তুলনামূলক ভোটও কম পড়ে। অন্য এলাকাগুলোয় যেখানে ৭০ থেকে ৮০ শতাংশ ভোট পড়েছিল, সেখানে টঙ্গীর অধিকাংশ কেন্দ্রে ৫০ থেকে ৫৫ শতাংশ ভোট পড়ে। ফলে ২০১৩ সালের নির্বাচনে টঙ্গী এলাকার ফলাফল আজমত উল্লার জন্য অভিজ্ঞতা সুখকর ছিল না।
বর্তমান সরকারের অধীন কোনো নির্বাচনে অংশগ্রহণ না করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে বিএনপি। তবে বিএনপির কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য হাসান উদ্দিন সরকারের ভাতিজা সরকার শাহনুর ইসলাম মেয়র পদে স্বতন্ত্র প্রার্থী হয়েছেন। তাঁর প্রতীক হাতি। হাসান উদ্দিন সরকার গাজীপুর সিটি করপোরেশনের গত নির্বাচনে বিএনপির মেয়র পদপ্রার্থী ছিলেন। শাহনুর ইসলামের পরিবারের রাজনীতিও টঙ্গীকেন্দ্রিক। শাহনুর টঙ্গীতেই প্রচারে জোর দিচ্ছেন। এই এলাকার বিএনপির ভোটারদের ভোট টানতে পারেন শাহনুর।

স্থানীয় সরকার নির্বাচনে টঙ্গী এলাকায় সরকার পরিবারের প্রভাব সব সময় ছিল। টঙ্গী পৌরসভা হওয়ার পর এর প্রথম চেয়ারম্যান হন হাসান উদ্দিন সরকার। পরেরবারও তিনি চেয়ারম্যান হন। টঙ্গী পৌরসভা সরকার পরিবারমুক্ত করেন এ পৌরসভার তিনবারের চেয়ারম্যান ও মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি আজমত উল্লা খান। গাজীপুর সিটি করপোরেশনে পরিণত হওয়ার আগপর্যন্ত তিনি এর মেয়র ছিলেন।

এই বিভাগের আরো খবর

© সকল স্বত্ব www.jugoshankho.com কর্তৃক ® সংরক্ষিত