সোমবার   ২৩ ডিসেম্বর ২০২৪   পৌষ ৯ ১৪৩১   ২১ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

৩৪

কোটা সংস্কার আন্দোলন

বৃহস্পতিবার বিকেলে ‘বাংলা ব্লকেড’

প্রকাশিত: ১০ জুলাই ২০২৪  

নিজস্ব প্রতিবেদক : সরকারি চাকরিতে কোটাব্যবস্থা বাতিল করে ২০১৮ সালের পরিপত্র পুনর্বহালের দাবিতে  বৃহস্পতিবার (১১ জুলাই) বিকেল সাড়ে ৩টা থেকে দেশব্যাপী অবরোধ কর্মসূচি দিয়েছে শিক্ষার্থীরা।

বুধবার (১০ জুলাই) সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার দিকে শাহবাগে এ ঘোষণা দেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের অন্যতম সংগঠক ঢাবি শিক্ষার্থী আসিফ মাহমুদ। তিনি বলেন, 'বিকেল সাড়ে তিনটা থেকে দেশের আনাচে-কানাচে বাংলা ব্লকেড অব্যাহত রাখবে। দেশের গুরুত্বপূর্ণ পয়েন্টগুলোতে ব্লকেড পালিত হবে।'

কোটা সংস্কার দাবিতে চলমান কর্মসূচির আওতায় আজ তৃতীয় দিনের মতো পালিত হয় বাংলা ব্লকেড। বুধবার সকাল ১০টা থেকে ব্লকেড পালন করেন আন্দোলনকারীরা। এর  আগে গত রবিবার বিকাল ৩টা  এবং সোমবার বিকাল সাড়ে ৩টা থেকে ৫-৬ ঘণ্টা করে বাংলা ব্লকেড পালন করা হয়।


আসিফ মাহমুদ বলেন, ২০১৮ সালে রাজপথে আন্দোলনের মাধ্যমে আমরা কোটাহীন মেধাভিত্তিক নিয়োগের পরিপত্র অর্জন করেছি। কিন্তু গত ৫ জুন আমাদের সেই পরিপত্র অবৈধ ঘোষণা করেন হাইকোর্ট। তারপর থেকে আমরা আমাদের অধিকার ফিরে পেতে আমরা আন্দোলন করছি। আমাদের কর্মসূচিকে অনেকে জনদুর্ভোগের কারণ বলে উল্লেখ করেছে। কিন্তু আমাদের এই আন্দোলন সবার অধিকার আদায়ের আন্দোলন।

কর্মসূচি ঘোষণা দিয়ে আসিফ বলেন, আগামীকাল বিকাল সাড়ে ৩টা থেকে বাংলা ব্লকেড কর্মসূচি পালিত হবে। সারা দেশে সড়ক ও রেলপথে আমাদের শিক্ষার্থীরা ব্লকেড কর্মসূচি পালন করবেন। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা কেন্দ্রীয় লাইব্রেরির সামনে জড়ো হবেন এবং সেখান থেকে বিক্ষোভ মিছিল নিয়ে এসে শাহবাগ ব্লক করবেন।

আরেক সমন্বয়ক শারজিস আলম বলেন, আদালতের রায় আমাদের বলছে চার সপ্তাহ পরিপত্র বহাল থাকবে। তা এটিও বলছে চার সপ্তাহ পরে আরেকটি শুনানি হতে পারে। সেখানে সরকারের পরিপত্রটি বহাল রাখতে পারে আবার অবৈধও ঘোষণা করতে পারে।

তিনি আরও বলেন,পূর্ণাঙ্গ রায় এখনও প্রকাশ হয়নি।  সেখানে ২০১৮ পরিপত্রটি বহাল রাখতে পারে বা সেটিকে অবৈধ ঘোষণা করতে পারে। আবার বলা হচ্ছে যদি কোটা প্রথা বাতিল করা হয়, সেখানে আমাদের কথা হচ্ছে আমরা বাতিল নয়, সংস্কার চাই। আমাদের দাবি কিন্তু কোটা বাতিল নয়, সব সরকারি চাকরিতে কোটার সংস্কারের যৌক্তিক সংস্কার। একজন মুক্তিযোদ্ধার সন্তানের করা রিটের কারণে পরিপত্রটি বাতিল করা হয়েছে। যদি আবারও কারও রিটের পর আবারও সেটি অবৈধ করা হয় তাহলে আমরা যাব কোথায়? জাতীয় সংসদে দাঁড়িয়ে প্রধানমন্ত্রী জারি করা পরিপত্র ছয় বছর পর অবৈধ ঘোষণা করা হয়, তাহলে আমাদের ভরসার জায়গা আসলে কোথায়? আমাদের দাবি নির্বাহী বিভাগের কাছে। তারা যদি আমাদের লিখিত দেয় যে কোটার যৌক্তিক সংস্কারের করার জন্য কমিটি গঠন করা হবে তাহলে আমাদের কথা দিচ্ছি আপনাদের সঙ্গে রাজপথে আর আমাদের দেখা হবে না।

প্রসঙ্গত, বুধবার সরকারি চাকরির প্রথম ও দ্বিতীয় শ্রেণিতে মুক্তিযোদ্ধা কোটা পদ্ধতি বাতিলের সিদ্ধান্ত অবৈধ ঘোষণা করে হাইকোর্টের দেওয়া রায়ের ওপর এক মাসের স্থিতাবস্থা জারি করেছেন আপিল বিভাগ। এ আদেশের ফলে মুক্তিযোদ্ধা কোটা বাতিল করে ২০১৮ সালে সরকারের জারি করা পরিপত্র বহাল থাকছে বলে জানিয়েছেন আইনজীবীরা। প্রধান বিচারপতি ওবায়দুল হাসানের নেতৃত্বে পাঁচ বিচারপতির আপিল বেঞ্চ এ আদেশ দেন।

তবে তাৎক্ষণিকভাবে আপিল বিভাগের এই আদেশ প্রত্যাখ্যান করে আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দেন আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা লিখিত বক্তব্যে বলেন, আমরা কোনও ঝুলন্ত সিদ্ধান্ত মানছি না। আমাদের এক দফা দাবি, সংসদে আইন পাস করে সরকরি চাকরির সব গ্রেডে শুধু পিছিয়েপড়া জনগোষ্ঠীর জন্য ন্যূনতম (সর্বোচ্চ ৫ শতাংশ) কোটা রেখে সব ধরনের বৈষম্যমূলক কোটা বাতিল করতে হবে।

© সকল স্বত্ব www.jugoshankho.com কর্তৃক ® সংরক্ষিত