তাইওয়ান ইস্যুতে নাগরিকদের জাপান ভ্রমণে সতর্ক করলো চীন
আন্তর্জাতিক ডেস্ক : তাইওয়ানকে কেন্দ্র করে তৈরি হওয়া উত্তেজনার জেরে নাগরিকদের জাপান ভ্রমণ না করার পরামর্শ দিয়েছে চীন। তাইওয়ান ইস্যুতে চলমান বিরোধের মধ্যেই এই মন্তব্য আসে। এদিকে শুক্রবার (১৪ নভেম্বর) বেইজিং জানায়, তারা জাপানের রাষ্ট্রদূতকে তলব করেছে। পাল্টা টোকিওও চীনের রাষ্ট্রদূতকে তলব করেছে। জাপানের প্রধানমন্ত্রী সানায়ে তাকাইচির মন্তব্যকে কেন্দ্র করে দুই দেশের সম্পর্ক টানাপড়েন পড়ে। ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি এ খবর জানিয়েছে।
শুক্রবার রাতে জাপানে অবস্থিত চীনা দূতাবাস তাদের উইচ্যাট পোস্টে চীনা নাগরিকদের সতর্ক করে বলে, পরিস্থিতি এখন চীনা নাগরিকদের ব্যক্তিগত নিরাপত্তার জন্য উল্লেখযোগ্য ঝুঁকি তৈরি করেছে। তাই নিকট ভবিষ্যতে জাপান ভ্রমণ এড়িয়ে চলার অনুরোধ জানানো হচ্ছে।
রাষ্ট্রীয় সংবাদমাধ্যম চায়না নিউজ সার্ভিস জানিয়েছে, শনিবার তিনটি চীনা এয়ারলাইন ঘোষণা করেছে যে জাপানের উদ্দেশে কেনা টিকিট বিনামূল্যে ফেরত বা পরিবর্তন করা যাবে।
গত ৭ নভেম্বর জাপানের নতুন প্রধানমন্ত্রী সানায়ে তাকাইচি পার্লামেন্টে বলেন, তাইওয়ানে যদি শক্তি প্রয়োগ বা সশস্ত্র হামলা হয় তাহলে জাপান সামরিক হস্তক্ষেপ করতে পারে। এরপর থেকেই তীব্র বাগ্যুদ্ধে জড়িয়েছে এই দুই দেশ।
দুই দেশের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় পরস্পরের বিরুদ্ধে কঠোর প্রতিবাদ জানিয়েছে। এমনকি এক চীনা কূটনীতিকের মন্তব্যকে কেউ কেউ তাকাইচিকে শিরশ্ছেদ করার হুমকি হিসেবে ব্যাখ্যা করেছেন।
এই বিরোধ চীন–জাপানের দীর্ঘদিনের ঐতিহাসিক বৈরিতা এবং আত্মশাসিত তাইওয়ানের সার্বভৌমত্ব নিয়ে দীর্ঘস্থায়ী ‘কৌশলগত অস্পষ্টতা’র সঙ্গেও সম্পর্কিত।
চীন গণতান্ত্রিকভাবে পরিচালিত তাইওয়ানকে নিজেদের অংশ দাবি করে এবং দ্বীপটির নিয়ন্ত্রণ নিতে বল প্রয়োগের সম্ভাবনা উড়িয়ে দেয়নি। তাইওয়ান জাপানের ভূখণ্ড থেকে মাত্র ১১০ কিমি (৭০ মাইল) দূরে অবস্থিত। তাইওয়ানের সরকার বেইজিংয়ের সার্বভৌমত্ব দাবিকে প্রত্যাখ্যান করে।
জাপানি নেতারা সাধারণত এমন পরিস্থিতি নিয়ে কথা বলার সময় প্রকাশ্যে তাইওয়ানের নাম উল্লেখ করা এড়িয়ে চলেন।
কিন্তু চীনবিরোধী মনোভাবের জন্য পরিচিত তাকাইচি প্রধানমন্ত্রী হওয়ার পর কিছুটা নরম সুরে কথা বললেও, দায়িত্ব গ্রহণের কয়েক সপ্তাহের মধ্যেই দুই দেশের সম্পর্ক উত্তপ্ত হয়ে উঠেছে।