সেন্টমার্টিনে যেতে মানতে হবে যেসব নির্দেশনা!
নিজস্ব প্রতিবেদক : দীর্ঘ বিরতির পর আগামী ১ নভেম্বর থেকে পর্যটকদের জন্য উন্মুক্ত হচ্ছে দেশের একমাত্র প্রবাল দ্বীপ সেন্টমার্টিন। তবে দ্বীপের নাজুক প্রাকৃতিক পরিবেশ, প্রতিবেশ ও জীববৈচিত্র্য সুরক্ষায় এবার সরকার ভ্রমণ সংক্রান্ত কঠোর নীতিমালা জারি করেছে।
সম্প্রতি পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের পরিবেশ-২ শাখা থেকে ১২টি গুরুত্বপূর্ণ নির্দেশনা সংবলিত একটি প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়েছে। ২০২৩ সালে প্রণীত 'সেন্ট মার্টিন দ্বীপের পরিবেশ, প্রতিবেশ ও জীববৈচিত্র্য সংরক্ষণ এবং পরিবেশবান্ধব পর্যটন নির্দেশিকা'র আলোকে এই নির্দেশনাগুলো কার্যকর হবে।
ভ্রমণ সংক্রান্ত গুরুত্বপূর্ণ নতুন নিয়ম:
অনলাইন টিকিট বাধ্যতামূলক: পর্যটকদের অবশ্যই বাংলাদেশ ট্যুরিজম বোর্ডের স্বীকৃত ওয়েব পোর্টালের মাধ্যমে অনলাইনে টিকিট কিনতে হবে। প্রতিটি টিকিটে ট্রাভেল পাস এবং কিউআর কোড সংযুক্ত থাকবে। কিউআর কোডবিহীন টিকিট নকল হিসেবে গণ্য হবে।
পর্যটক নিয়ন্ত্রণ: প্রতিদিন গড়ে দুই হাজারের বেশি পর্যটককে দ্বীপে ভ্রমণের অনুমতি দেওয়া হবে না।
নৌযান চলাচলে অনুমোদন: বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌ-পরিবহন কর্তৃপক্ষ (বিআইডব্লিউটিএ) এখন থেকে পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের অনুমোদন ছাড়া কোনো নৌযানকে দ্বীপে চলাচলের অনুমতি দিতে পারবে না।
মাসভিত্তিক ভ্রমণ ও রাত্রিযাপন:
নভেম্বর: এই মাসে পর্যটকরা শুধুমাত্র দিনের বেলায় ভ্রমণ করতে পারবেন, রাত্রিযাপন করা যাবে না।
ডিসেম্বর ও জানুয়ারি: এই দুই মাসে রাত্রিযাপনের অনুমতি থাকবে।
ফেব্রুয়ারি: এই মাসে পর্যটক যাতায়াত সম্পূর্ণভাবে বন্ধ থাকবে।
পরিবেশবিরোধী কার্যক্রম নিষিদ্ধ: দ্বীপে রাতে সৈকতে কোনো প্রকার আলো জ্বালানো, উচ্চ শব্দ সৃষ্টি করা, বা বারবিকিউ পার্টি করা কঠোরভাবে নিষিদ্ধ করা হয়েছে।
জীববৈচিত্র্য সংরক্ষণ: কেয়া বনে প্রবেশ, কেয়া ফল সংগ্রহ বা ক্রয়-বিক্রয়, সামুদ্রিক কাছিম, পাখি, প্রবাল, রাজকাঁকড়া, শামুক-ঝিনুকসহ কোনো ধরনের জীববৈচিত্র্যের ক্ষতি করা কঠোরভাবে নিষিদ্ধ।
যানবাহন চলাচল নিষিদ্ধ: সৈকতে মোটরসাইকেল, সি-বাইকসহ যেকোনো মোটরচালিত যানবাহন চলাচল সম্পূর্ণভাবে নিষিদ্ধ।
প্লাস্টিক ব্যবহার নিরুৎসাহ: নিষিদ্ধ পলিথিন বহন করা যাবে না। পাশাপাশি একবার ব্যবহার্য প্লাস্টিক, যেমন চিপসের প্যাকেট, প্লাস্টিক চামচ, স্ট্র, সাবান ও শ্যাম্পুর মিনিপ্যাক এবং ৫০০ ও ১০০০ মিলিলিটারের প্লাস্টিক বোতল ইত্যাদি বহন নিরুৎসাহিত করা হয়েছে। পর্যটকদের নিজস্ব পানির ফ্লাস্ক সঙ্গে রাখার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।
সরকার আশা করছে, এই কঠোর নির্দেশনাগুলো বাস্তবায়নের মাধ্যমে সেন্টমার্টিন দ্বীপের অনন্য প্রাকৃতিক সৌন্দর্য ও জীববৈচিত্র্য সুরক্ষিত থাকবে এবং দ্বীপটি একটি দায়িত্বশীল পর্যটন গন্তব্যের উদাহরণ তৈরি করবে।