ঢাকা, বাংলাদেশ

মৃত্যুদণ্ডের রায়ে ‘আমি কষ্ট পাচ্ছি’, বললেন রাষ্ট্রনিযুক্ত আইনজীবী

প্রকাশিত :

নিজস্ব প্রতিবেদক : জুলাই গণঅভ্যুত্থান দমানোর চেষ্টায় মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে মৃত্যুদণ্ড দেওয়ার রায়ে ‘কষ্ট’ অনুভব করছেন রাষ্ট্রনিযুক্ত আসামিপক্ষের আইনজীবী আমির হোসেন। সোমবার (১১ নভেম্বর) রায় ঘোষণার পর সাংবাদিকদের সামনে এসে তিনি বলেন, আমি কষ্ট পাচ্ছি… আমার আসামির সাজা হয়েছে, সর্বোচ্চ সাজা হয়েছে। আমাকে কষ্ট দেবে না? এটিই স্বাভাবিক।

বিচারপতি মো. গোলাম মর্তূজা মজুমদারের নেতৃত্বাধীন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১ এদিন রায় ঘোষণা করে। অপর দুই বিচারক ছিলেন বিচারপতি মো. শফিউল আলম মাহমুদ ও বিচারক মো. মোহিতুল হক এনাম চৌধুরী। জুলাই অভ্যুত্থানে মানবতাবিরোধী অপরাধের প্রথম রায় এটাই।

রাষ্ট্রনিযুক্ত আইনজীবী হিসেবে শেখ হাসিনা ও সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালের পক্ষে লড়াই করেছেন আমির হোসেন। মামলার রায়ে দু’জনকেই মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হয়। তবে রাজসাক্ষী হওয়ায় সাবেক আইজিপি চৌধুরী আব্দুল্লাহ আল-মামুনকে দেওয়া হয়েছে পাঁচ বছরের কারাদণ্ড।
রায়ের প্রতিক্রিয়ায় আমির বলেন, রায়টা আমার পক্ষে যায়নি; এজন্য আমি ক্ষুব্ধ, কষ্ট লালন করছি। আসামিদের ফাঁসির রায়ে আমি কষ্ট পেয়েছি।

এ মামলায় আপিল করার সুযোগ নেই উল্লেখ করে তিনি বলেন, আমার পক্ষে আপিলের সুযোগ নাই, যতদিন না আমার মক্কেলরা আত্মসমর্পণ বা গ্রেপ্তার হবেন। ততদিন পর্যন্ত কোনো ডিভিশনে যাওয়ার সুযোগ নাই। এমনকি রায়ের কপিও এখন পাব না—আইনেই আছে।

১৫ মাস আগে জুলাই অভ্যুত্থানে ক্ষমতা হারানোর পর শেখ হাসিনা এখন ভারতে পলাতক রয়েছেন বলে জানানো হয়। আসাদুজ্জামানও পলাতক। বাংলাদেশের ইতিহাসে প্রথমবারের মতো কোনো সাবেক সরকারপ্রধান মৃত্যুদণ্ডের মুখোমুখি হলেন। অতীতে এই একই আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল থেকেই যুদ্ধাপরাধ মামলায় জামায়াতের পাঁচ নেতা ও বিএনপির একজনের মৃত্যুদণ্ড কার্যকর হয়েছিল। শেখ হাসিনার সরকারই গঠন করেছিল সেই আদালত।

শেখ হাসিনার পক্ষে উপস্থাপিত যুক্তিতর্ক আদালত গ্রহণ করেনি—এ প্রশ্নে আমির হোসেন বলেন, আমার যুক্তিতর্ক নেয়নি তা বলব না। নিয়েছে অনেক কিছুই। তবে মনে হয়েছে, প্রসিকিউশনের যুক্তি আরো শক্তিশালী—তাই তারা সেই অনুযায়ী রায় দিয়েছেন।

সোমবার বেলা ১২টা ৪০ মিনিটে ৪৫৩ পৃষ্ঠার রায় পড়া শুরু হয়। বিচারক মোহিতুল হক এনাম চৌধুরী আদালতের এখতিয়ার ও অভিযোগ তুলে ধরেন, এরপর তথ্য-উপাত্ত উপস্থাপন করেন বিচারপতি শফিউল আলম মাহমুদ। সবশেষে ট্রাইব্যুনালের চেয়ারম্যান চূড়ান্ত রায় ঘোষণা করেন।রায়ের মূল অংশ ট্রাইব্যুনাল সরাসরি সম্প্রচার করে।