কড়াইল বস্তিতে আগুন : শতাধিক ঘর পুড়ে ছাই
নিজস্ব প্রতিবেদক : রাজধানীর কড়াইল বস্তিতে লাগা ভয়াবহ আগুন নিয়ন্ত্রণে আনতে ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্সের ২১টি ইউনিট কাজ করছে। পানি সংকটের কারণে আগুন নিয়ন্ত্রণে বেগ পেতে হচ্ছে কর্মীদের। আগুন দ্রুত ছড়িয়ে পড়ায় বস্তির বহু ঘর পুড়ে ছাই হয়ে যাচ্ছে। ঘরহারা নিম্ন আয়ের মানুষের কান্নায় ভারী হয়ে উঠেছে পুরো এলাকা।
মঙ্গলবার (২৫ নভেম্বর) বিকাল ৫টা ২২ মিনিটে আগুন লাগার সংবাদ পায় ফায়ার সার্ভিস অ্যান্ড সিভিল ডিফেন্স অধিদফতর। ফায়ার সার্ভিসের মিডিয়া সেলের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা শাহজাহান শিকদার বলেন, ‘আগুনের খবর পেয়ে প্রথম ধাপে ৭টি ইউনিট পাঠানো হয়। কিন্তু সড়কে যানজটের কারণে ইউনিটগুলো সময় মতো পৌঁছাতে পারেনি। সন্ধ্যা ৬টা ৬ মিনিটে সেখানে পৌঁছায়। দ্বিতীয় ধাপে পাঠানো হয় আরও ৪টি ইউনিট। এগুলো পৌঁছায় ৬টা ২৫ মিনিটে। তৃতীয় ধাপে ৫টি ইউনিট পাঠানো হয়েছে। এরপর আরও ৫টি ইউনিট পাঠানো হয়।’
সরেজমিনে দেখা যায়, দুর্ঘটনা এড়াতে ফায়ার সার্ভিস ও পুলিশ বস্তির ভেতরে প্রবেশ নিষিদ্ধ করেছে। স্থানীয়দের ঘটনাস্থল থেকে দূরে থাকার আহ্বান জানানো হচ্ছে।
যেসব ঘর এখনো পুরোপুরি দগ্ধ হয়নি, সেসব ঘর থেকে মূল্যবান জিনিসপত্র বের করে নিতে মরিয়া হয়ে চেষ্টা করছেন বাসিন্দারা। অনেকেই মাথায় বা হাতে করে জিনিসপত্র বের হচ্ছেন।
আগুনে সব হারানো বস্তিবাসী লাভলী বেগম কান্নাভেজা কণ্ঠে বলেন, আমার সব শেষ। সাত বছর ধরে কষ্ট করে তিল তিল করে জিনিস কিনেছিলাম। টিভি, ফ্রিজ—সবই এখন পুড়ে ছাই। কিস্তির টাকা দিতে হয় মাসে মাসে, এখন কী করব?
পোশাক শ্রমিক লাকি আক্তার বলেন, শুনেছি আমার ঘরটাও পুড়ে গেছে। সব জিনিস নাকি শেষ। এখন আমি কোথায় যাব, কীভাবে শুরু করব জানি না।
বাসিন্দাদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, লাভলী ও লাকির মতো শত শত নিম্ন আয়ের মানুষ এই বস্তিতে থাকেন। আজকের আগুনে তাদের অনেকেই একেবারে পথে বসে গেলেন।
ফায়ার সার্ভিসের সর্বশেষ তথ্যে জানা গেছে, আগুন ইতোমধ্যে বড় আকার ধারণ করেছে এবং চারদিকে দ্রুত ছড়িয়ে পড়ছে। পানি সংকট পরিস্থিতিকে আরও জটিল করে তুলেছে। আগুন নেভাতে সর্বোচ্চ চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে ২১টি ইউনিট।