ঢাকা, বাংলাদেশ

‘শেখ হাসিনাকে ফেরাতে দিল্লিকে দেওয়া চিঠির জবাব পায়নি বাংলাদে ‘

প্রকাশিত :

কূটনৈতিক প্রতিবেদক : জুলাই গণঅভ্যুত্থানের সময় সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধে মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে হস্তান্তরের জন্য দিল্লিকে দেওয়া চিঠি জবাব এখনো আসেনি বলে জানিয়েছেন পররাষ্ট্র উপদেষ্টা মো. তৌহিদ হোসেন।

বুধবার (২৬ নভেম্বর) দুপুরে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে এ তথ্য জানান তিনি।

কোন প্রক্রিয়ায় ভারতে নতুন করে চিঠি পাঠানো হয়েছে, জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘নোট ভারবাল আমাদের মিশনের মাধ্যমে ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়েছে। কোনো উত্তর এখনো আসেনি। এত তাড়াতাড়ি উত্তর আশাও করি না আমরা।’

উত্তর এত তাড়াতাড়ি আশা করেন না কেন?- এক সাংবাদিকের এমন প্রশ্নের জবাবে পররাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, ‘এত তাড়াতাড়ি উত্তর! আমি তো আগের চিঠিরই উত্তর পাইনি এখনো। সুতরাং এটা কালকে বা এক সপ্তাহের মধ্যে উত্তর দিয়ে দেবে, এটা প্রত্যাশা করি না। তবে আমরা আশা করি যে এর উত্তর আমরা পাব। তবে এক সপ্তাহের মধ্যে উত্তর এসে যাবে, এটা আমি প্রত্যাশা করি না।’

চিঠিতে কী বলা হয়েছে জানতে চাইলে তৌহিদ হোসেন বলেন, ‘আমরা বলেছি, যেহেতু তাকে বিচারে সাব্যস্ত করা হয়েছে কাজেই তাকে যেন ফেরত দেওয়া হয়।’

আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ভারতীয় পর্যবেক্ষক আসতে চাইলে অনুমতি দেওয়া হবে কি না, জানতে চাইলে পররাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, ‘এটা পুরোপুরি নির্বাচন কমিশনের বিষয়। এটাতে আমাদের কোনো ভূমিকা নেই। এমনকি আমরা কোনো সহায়তাও করব না, যদি না নির্বাচন কমিশন আমাদের বলে।’

গত বছর ছাত্র–জনতার অভ্যুত্থানের মুখে প্রধানমন্ত্রীর পদ থেকে পদত্যাগ করে ভারতে পালিয়ে যান শেখ হাসিনা। এরপর তাঁকে প্রত্যর্পণের অনুরোধ জানিয়ে বাংলাদেশ দুই দফায় চিঠি দিলেও সাড়া দেয়নি ভারত। এর মধ্যে ১৭ নভেম্বর আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল গত বছরের ওই আন্দোলনের সময় সংঘটিত হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় মানবতাবিরোধী অপরাধে দোষী সাব্যস্ত করে শেখ হাসিনা ও সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খানকে মৃত্যুদণ্ড দেন।

এরপর শেখ হাসিনাকে হস্তান্তরের জন্য ভারতকে তৃতীয়বারের মতো চিঠি দেয় বাংলাদেশ। চিঠিতে বলা হয়, বিস্তারিত বিচারিক প্রক্রিয়া শেষে ১৭ নভেম্বর আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল রায় দিয়েছেন। আদালত মানবতাবিরোধী অপরাধের দায়ে শেখ হাসিনাকে মৃত্যুদণ্ডে দণ্ডিত করেছেন। এই পরিপ্রেক্ষিতে বাংলাদেশ দুই দেশের মধ্যে সই হওয়া প্রত্যর্পণ চুক্তি অনুযায়ী শেখ হাসিনাকে হস্তান্তরের জন্য ভারতকে পুনরায় অনুরোধ জানাচ্ছে।

এই চিঠির কোনো জবাব নয়াদিল্লি না দিলেও শেখ হাসিনাকে মৃত্যুদণ্ড দিয়ে রায় ঘোষণার পর একটি বিবৃতি দিয়েছিল ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। তাতে বলা হয়েছিল, ‘একটি নিকটপ্রতিবেশী হিসেবে ভারত বাংলাদেশে শান্তি, গণতন্ত্র, অন্তর্ভুক্তি, স্থিতিশীলতাসহ বাংলাদেশের জনগণের সর্বোত্তম স্বার্থের বিষয়ে অঙ্গীকারবদ্ধ রয়েছে। এই লক্ষ্য অর্জনে আমরা সব সময় সব অংশীজনের সঙ্গে গঠনমূলকভাবে যুক্ত থাকব।’