শেরপুরে বন্য হাতির হানা, তিন দিনে ক্ষতিগ্রস্ত ৯ একর জমির ধান
শেরপুরের নালিতাবাড়ী উপজেলার সীমান্তঘেঁষা পশ্চিম সমশ্চুড়া গ্রামে সন্ধ্যা নামলেই নেমে আসছে বন্য হাতির পাল। খাদ্যের খোঁজে ধানখেতে তাণ্ডব চালিয়ে গত তিন দিনে ১৭ কৃষকের প্রায় ৯ একর জমির ফসল নষ্ট হয়েছে বলে দাবি কৃষকদের। হাতির আক্রমণ আতঙ্কে নির্ঘুম রাত কাটছে গ্রামবাসীর। তাঁরা হাতি তাড়াতে সরকারি সহযোগিতা চেয়েছেন।
স্থানীয় কৃষক ও বন বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, গত রোববার রাতে ভারতের মেঘালয় সীমান্তবর্তী পাহাড় থেকে ৩০ থেকে ৩৫টি বন্য হাতির একটি পাল পশ্চিম সমশ্চুড়া জঙ্গলে নেমে আসে। এরপর টানা তিন দিন সন্ধ্যা নামলেই হাতির দলটি পাহাড়ের ঢালে আমন ধানের খেতে নেমে তাণ্ডব চালাচ্ছে। ধান খেয়ে ও পা দিয়ে মাড়িয়ে ফসল নষ্ট করছে প্রাণীগুলো।
ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকদের মধ্যে আছেন আক্কেল আলী, সাইদ মিয়া, মোশাররফ হোসেন, শফিকুল ইসলাম, বধুমিয়া, অনিল কোচ, রিপন মিয়া, মামুন মিয়া, সেলিম মিয়া, আবদুল মজিদ, আবদুল মতিন, বিল্লাল হোসেন, ইজ্জত আলী, বাবুল মিয়া, হিটলার উদ্দিন, আইয়ুব আলী ও আবদুল হক। তাঁদের জমির মোট ৮ একর ৪০ শতক ধান নষ্ট হয়েছে বলে স্থানীয়ভাবে জানা গেছে।
ক্ষতিগ্রস্ত কৃষক আইয়ুব আলী বলেন, ‘ফসল রক্ষায় গ্রামের মানুষ মিলে সারা রাত হাতি পাহারা দিতে হচ্ছে। রাতের ঘুম হারাম হয়ে গেছে। আমার তিন একর জমির ফসলের মধ্যে গত রাতে এক একরের ধান খেয়ে পা দিয়ে মাড়িয়ে নষ্ট করেছে হাতির দল।’
শেরপুরের নালিতাবাড়ী উপজেলার সীমান্তবর্তী এলাকায় তিন দিন ধরে অবস্থান করছে ৩০-৩৫টি বন্য হাতি। গত সোমবার পশ্চিম সমশ্চুড়া গ্রামে থেকে
শেরপুরের নালিতাবাড়ী উপজেলার সীমান্তবর্তী এলাকায় তিন দিন ধরে অবস্থান করছে ৩০-৩৫টি বন্য হাতি। গত সোমবার পশ্চিম সমশ্চুড়া গ্রামে থেকেছবি: আবদুল মান্নান
একই গ্রামের ওমর ফারুক বলেন, হাতির পালের তাণ্ডবের ভয়ে গতকাল রাতে নারী-শিশুদের ঘর থেকে সরিয়ে নিতে হয়েছিল। সন্ধ্যা হলেই গ্রামবাসীদের আতঙ্কের মধ্যে থাকতে হচ্ছে।
সমশ্চুড়া এলাকার এলিফ্যান্ট রেসপন্স টিমের সভাপতি আরফান আলী। তিনি প্রথম আলোকে বলেন, দিনে হাতির দল জঙ্গলে থাকে, সন্ধ্যার আগে খাদ্যের খোঁজে মাঠে নামে। হাতিদের যাতে কেউ যাতে আঘাত না করে, এ বিষয়ে দলের সদস্যরা সতর্ক আছেন।
স্থানীয় বাসিন্দা ও বন বিভাগের এলিফ্যান্ট রেসপন্স টিমের সদস্যরা হাতিগুলোকে লোকালয় থেকে জঙ্গলে ফেরাতে কাজ করছেন বলে জানিয়েছেন ময়মনসিংহ বন বিভাগের সমশ্চুড়া বিট কর্মকর্তা মো. কাওসার। তিনি বলেন, হাতির পালটি কৃষকদের ফসলে হানা দিচ্ছে। এতে প্রায় আট-নয় একর জমির ফসল ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। ক্ষতিপূরণের জন্য কৃষকদের আবেদন করতে বলা হয়েছে।